বাবা জিএম হোসাইন
পেশায় শিক্ষক আর মা শাহ পারভীন আখতার একজন সমাজসেবিকা। দু’জনই গান পছন্দ করতেন। তাই তাদের একমাত্র মেয়ে জান্নাতুল ফিরদাউস মিষ্টি ছোটবেলা
থেকেই নাচ-গানের চর্চা করতেন। গানের পাশাপাশি কৈশেরে ছবি আঁকাও শিখেছেন তিনি।
তবে বেড়ে ওঠার
সঙ্গে পাল্টে যেতে পারে শখ, ইচ্ছে ও ভবিষৎ পরিকল্পনা। তেমনটাই ঘটেছে এ
প্রজন্মের চিত্রনায়িকা জান্নাত মিষ্টির বেলায়। ধীরে ধীরে তিনি চলচ্চিত্রাঙ্গনের
পরিচিত মুখ হয়ে উঠছেন। এখনও কোনো ছবি মুক্তি না পেলেও বেশকিছু ছবি আছে তার হাতে।
খুলনা শহরে
এইচএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা শেষ করে ২০১০ সালে ঢাকায় আসেন মিষ্টি। ভর্তি হন রাজধানীর
মালিবাগে সাফেনা মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কলেজে। সেখানেই দ্বিতীয় বর্ষে ডেন্টাল
বিষয়ে পড়াশোনা করছেন।
মিষ্টি নিজেও
জানতেন না বিনোদন অঙ্গনে জড়িয়ে যাবেন। এক বিকেলে বিনোদন বিভাগে এসে তিনি বললেন, ‘চলচ্চিত্রে আমার পথচলা শুরু হয়েছে বলতে পারেন হঠাৎ। ২০১২ সালে আমার কাজিন সজল
আহমেদের মাধ্যমে ভেনাস সিটির একটি বিজ্ঞাপনচিত্রে মডেল হই। এরপর কাজ করেছি কেয়া
কসমেটিকসের বিজ্ঞাপনে। তারপর নাটকে। চলচ্চিত্রে আমাকে নিয়ে এসেছেন আরেক কাজিন শীষ
মনোয়ার। তিনি অনেক আগে থেকেই চাইতেন আমি বড় পর্দার জন্য কাজ করি।’
ঢাকায় আসার পরই
বেশকিছু টিভি নাটকে অভিনয় করতে দেখা গেছে মিষ্টিকে। গত বছর তার অভিনীত প্রথম নাটক ‘দিনরাত্রির মানুষ’ মাছরাঙা টিভিতে প্রচারিত হয়। এরপর পড়াশোনা
ব্যস্ততার ফাঁকে ফাঁকে কাজ করেন তুহিন অবন্তর ‘স্বর্ণলক্ষ্মী’, ফয়সাল মাহমুদের ‘এক্সিডেন্ট’, আমজাদ হোসেনের ‘জব্বার আলীর দিনকাল’ এবং সজল আহমেদের ‘বৃষ্টি থামার পর’, ‘ভেজা মেঘের স্বপ্নগুলো’ নাটকে।
নাটকে অভিনয়ের
অভিজ্ঞতা নিয়ে মিষ্টি বলেন, ‘নাটকে কাজ করার ইচ্ছে ছিল না। মডেল হিসেবেই
পরিচিতি পাওয়ার ইচ্ছে ছিল বেশি। তারপরও অভিনয় শেখার জন্য কাজ করেছি নাটকে।’
সম্প্রতি
চিত্রনায়ক বাপ্পীর বিপরীতে শাহাদাত হোসেন লিটন পরিচালিত ‘লাভ এক্সপ্রেস’ ছবিতে অভিনয় করেছেন জান্নাত মিষ্টি। এ ছাড়া
ওয়াজেদ আলী সুমনের ‘পাত্রী চাই’ এবং নজরুল
ইসলামের ‘চিনিবিবি’ ছবিতে কাজ
করেছেন। সামনে জাজ মাল্টিমিডিয়ার ‘পথকলি’ এবং রাজু চৌধুরীর
‘লাভ ইজ লাইফ’ ছবির কাজ শুরু
করবেন তিনি।
এসব ছবিতে তাকে
গ্রামীণ ও শহুরে মেয়ের চরিত্রে পর্দায় দেখবেন দর্শকরা। এর মধ্যে ‘চিনিবিবি’ ছবিটি নিয়ে বেশ আশাবাদী তিনি। এতে গ্রামের
মাতব্বরের এক আহ্লাদী মেয়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মিষ্টি। দুই গ্রামের মধ্যে খেলা
নিয়ে একটি ঝামেলা তৈরি হয় গল্পে। এ ছবিতে পালাগান, পল্লীগান ও যাত্রাগানে
থাকছে তার পরিবেশনা।
অভিনয়ের বাইরে
মিষ্টির নিজস্ব প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আছে। নাম ‘কুঁড়েঘর পিকচার্স’। এখান থেকে বিভিন্ন নাটক ও বিজ্ঞাপন নির্মাণ করা হয়। আসন্ন রোজার ঈদের জন্যও
কয়েকটি নাটক তৈরি হচ্ছে বলে জানান তিনি। এ ছাড়া স্টাইল মেহেদি ও মডার্ন কসমেটিকসের
একটি পণ্যের বিজ্ঞাপনে দেখা যাবে তাকে।
0 comments:
Post a Comment